দিন ১- পৃথিবীতে জীবনের সূচনা

দিন ১- পৃথিবীতে জীবনের সূচনা

জীবনের অর্থ খুঁজে বের করতে, চলুন এটা দিয়ে শুরু করি কিভাবে জীবন শুরু হলো। চলুন দেখি বিজ্ঞানীরা কি আবিষ্কার করেছে। 

জীবনকে পৃথিবীতে সম্ভবপর করতে, আপনার দুইটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিষ দরকার। সেটাই একজন কার্ল সাগান নামের একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ১৯৬৬ সালে আবিষ্কার করেন।

সর্বপ্রথম সঠিক ধরণের নক্ষত্র প্রয়োজনঃ শক্তির উৎস (একটি সূর্য)

দ্বিতীয়ত, গ্রহ থেকে নক্ষত্রের দূরত্ব সঠিক হতে হবে। বেশি দূরে হলে বেশি শীত লাগবে। আবার বেশি কাছে হলে, অনেক গরম লাগবে। 

কার্ল সাগান হিসাব করেন যে মহাবিশ্বে এরকম ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ টি গ্রহ রয়েছে যেগুলো জীবন ধারণের জন্য যোগ্য। 

১৯৬৬ সালের পর থেকে কি হয়েছিলো? বিজ্ঞানীরা জীবন এবং মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরো জানলো।যেহেতু আমরা আরো পড়েছি, আমরা আরও অনেক কিছু সম্পর্কে জেনেছি যা পৃথিবীতে জীবন ধারণ সম্ভব করার জন্য প্রয়োজনীয়।  

পৃথিবীতে জীবের বাঁচার সম্ভাবনা নেই ?! 

অনেক গবেষণার পর, অনেক নতুন নির্ণায়ক বের হলো। প্রথমে ১০টি, পরে ২০টি এবং এমনকি পরে ৫০ এর বেশি! সবকিছুই পৃথিবীতে জীবন ধারণ সম্ভবপর করার জন্য জরুরী। সুতরাং জীবন যাপন করা যায় এমন গ্রহের সংখ্যা হঠাৎ হ্রাস পেলো!

আসলে…  স্বতঃস্ফূর্ত জীবন কোনো গ্রহেই সম্ভব নয় (এমনকি পৃথিবীতেও না!)! সব নির্ণায়ক বিবেচনা করলে আমাদের জীবিত থাকার কথা ছিল না! তবুও আমরা এখানে… জীবিত এবং জীবন নিয়ে চিন্তা করছি।  

এত কিছু জানার পরও, এটা হয়ত বিশ্বয়কর নয় যে আমরা অন্য গ্রহে কোন জীবনের খোঁজ পাইনি। 

এটা আরও অনেক সুবিশাল 

বর্তমানে বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে যে একটি গ্রহের ন্যূনতম ২০০টি জিনিষ দরকার জীবন ধারণের জন্য। শুধু তাই নয়, প্রতিটিরই সঠিক মান থাকতে হবে এবং অনেকগুলো আবার একে অপরের উপর নির্ভর করে।  

উধাহরণস্বরূপঃ কাছাকাছি একটি বড় গ্রহের (জুপিটারের মত) প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জুপিটারের মধ্যাকর্ষণ শক্তি অনেক গ্রহাণু টেনে নিয়ে যায়, সেটা পৃথিবীকে  হাজার হাজার বার আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছে। 

 

এটা ছিল অনেকগুলো নির্ণায়ক এর মধ্যে একটি মাত্র উদাহরণ  যা জীবনকে সম্ভবপর করে। 

মহাবিশ্বে জীবনের বিরুদ্ধে বাঁধাগুলো অবিশ্বাস্য! 

 

যাই হোক আমরা বেচে আছি!

এখনও আমরা বেঁচে আছি, আমরা শুধু বেঁচেই নেই বরং অস্তিত্ব নিয়েও কথা বলছি। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা কি পুরোটাই ভাগ্য যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো সঠিকভাবে শুধু পৃথিবীতেই স্থাপন করা?

কোন পরিস্থিতিতে এটা মেনে নেয়া সম্ভব যে কোন সাধারণ শক্তি দ্বারা পৃথিবীতে জীবনের সূচনা হয়নি? বিশেষত তখন যখন এটা বিবেচনা করা হবে যে পৃথিবীতে জীবন ধারণের জন্য দরকারী “ফাইন-টিউনিং” সমস্ত মহাজগতের টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ফাইন টিউনিং এর চেয়ে অনেক কম!! 

উদাহরণস্বরূপঃ মহাকাশবিজ্ঞানীরা অনুমান করে যে চারটি মূল শক্তি (মধ্যাকর্ষণ, তড়িৎ চুম্বকীয় বল এবং “দুর্বল” ও “সবল” নিউক্লিয় বল) বিগ ব্যাং এর পরের ১সেকেন্ডের ১মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময়ে নির্ধারিত হয়েছে। একটি মান পরিবর্তিত হলেই মহাবিশ্ব টিকেবে না। যেমন, যদি নিউক্লিয়ার “সবল” বল এবং তড়িৎ চুবম্বকীয় বলের অনুপাত অল্প পরিমাণেও যদি পরিবর্তন করা হয়, একটি  ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ এর ভগ্নাংশেও-… কোন তাঁরা গঠিত হতো না! 

আপনি কি বোকা? 

এই বিষয়ে নিজে নিজে গবেষণা করুন। নিজে নিজে বের করুন বিজ্ঞান এ পর্যন্ত কি কি সত্য খুঁজে পেয়েছে। দয়া করে এটাও মাথায় রাখবেন যে বিজ্ঞানীদের নিজস্ব কিছু বিবেচনা আছে যাতে করে তারা একই বিষয়বস্তু ভিন্ন রঙে দেখতে পারে। 

 

কোন কাকতালীয় বিষয় নয় 

যখন কোন পরিস্থিতিতে সব প্যারামিটার সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়েছে তখন পরিস্থিতির সম্ভাবনা- বিষয়টা কয়েন টস করে একাধারে ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ বার “মাথা” আনার সম্ভাবনার মতো। এটা কি সম্ভব হবে?  

 

বিগ ব্যাং তাহলে কি? 

ফ্রেড হয়লে একজন জ্যোতিষী যিনি ‘বিগ ব্যাং’ টার্ম বের করেন। একটি স্বনামধন্য তত্ব যা বিলিয়ন বছর আগে বড়সড় বিস্ফোরণের মাধ্যমে সকল জীবনের শুরু ব্যাখা করে। 

যদিও ফ্রেড ফয়েলে একজন নাস্তিক ছিলেন, তিনি পৃথিবীতে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর ব্যাপারে “অনেকটাই নড়ে গিয়েছিলেন। তিনি লিখেছে “একটি সাধারণ অনুমান ভিত্তিক অনুধাবন, সেসব তথ্যের যা একজন চরম বুদ্ধিমান ব্যাক্তির পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানের জ্ঞ্যান…”   

যদি বিজ্ঞানিরাই সম্পূর্ণভাবে জীবনের শুরু ব্যাখা না করতে পারে, তাহলে জীবনের সূত্রপাত কোথা থেকে হতে পারে? 

কেন সবকিছু এত জটিল যে আমরা সম্পূর্ণ বুঝতে পারি না, অনেক বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার পরেও? 

 

আজকের জন্য চিন্তা করতে 

দিন ১ এর জন্য এসবই শেষ। আপনি এ বিষয়ে সারাদিনব্যাপী ভাবতে পারেন। আপনার জন্য কিছু দরকারী প্রশ্নঃ 

  • পৃথিবীতে জীবন কি কাকতালীয় নাকি এর পেছনে কোন প্রকার জ্ঞ্যান কাজ করেছে? 
  • আপনি যদি জীবন ধারণের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে গবেষণা করতে চান, তাহলে চালিয়ে যান। 
  • আমি কেন অন্য মানুষদের থেকে আলাদা 
  • আমার অস্তিত্বের পেছনে কি কারণ আছে? 

আগামীকাল ফিরে আসুন পরবর্তী দিনের জন্য

দিন ২ এর দিকে যান